ইউরোনিয়াম এনরিচমেন্ট বা পরমাণু সমৃদ্ধকরণ কী? কীভাবে এটি করা হয়?

 

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের শুরু থেকেই গণমাধ্যমের খবর এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে দুটি শব্দ ঘুরে ফিরে বার বার শোনা যাচ্ছে সেগুলো হলো–– ইউরোনিয়াম এনরিচমেন্ট বা পরমাণু সমৃদ্ধকরণ। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যের পরেই মূলত বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে।


মি. নেতানিয়াহু দাবি করেন, ইরান বহু বছর ধরে ইউরোনিয়ান সমৃদ্ধ করছে এবং বর্তমানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির "কাছাকাছি রয়েছে"।


এমন দাবি করার পর গত ১৩ই জুন ইরানের ওপর আকস্মিকভাবে হামলাও চালিয়ে বসে ইসরায়েল। জবাবে ইরানও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালে শুরু হয় সংঘাত।


দশ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাতের একপর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র তাতে জড়িয়ে পড়ে।


বিশেষজ্ঞদের মতে, পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে হলে ৯০ শতাংশের ওপরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রয়োজন হয়।

সেখানে ইরান এখন পর্যন্ত ৬০ শতাংশের মতো ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে বলে গত মার্চে জানায় আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।


ইরান দাবি করেছে, তারা কোনো পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে না, বরং বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো শান্তিপূর্ণ কাজের জন্যই পরমাণু সমৃদ্ধকরণ করা হচ্ছে।


কিন্তু এই পরমাণু সমৃদ্ধকরণ আসলে কী? কীভাবে সেটি করা হয় এবং কতক্ষণ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ বলে মনে করা হয়?


ইউরেনিয়াম আসলে কী?

পারমাণবিক বোমা বানানোর ক্ষেত্রে যে উপাদানটি সবচেয়ে বেশি দরকার হয়, সেটি হলো ইউরোনিয়াম।


এটি একটি ধাতব পদার্থ, যা পৃথিবীর মাটিতেই পাওয়া যায়।


ইউরোনিয়ামে ভিন্ন ভিন্ন ভরের (আইসোটোপ) পরমাণু থাকে। বিজ্ঞানীরা সেগুলোকে সংক্ষেপে 'ইউ-২৩৮' এবং 'ইউ-২৩৫' নামে চিহ্নিত করে থাকেন।


প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া ইউরেনিয়ামে 'ইউ-২৩৮'ই সবচেয়ে বেশি থাকে, যা প্রায় ৯৯ দশমিক তিন শতাংশ।


অন্যদিকে, মাত্র শূন্য দশমিক সাত শতাংশ থাকে 'ইউ-২৩৫'।


কিন্তু শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে এই 'ইউ-২৩৫' আইসোটোপই সবচেয়ে কার্যকর এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।


তবে প্রাকৃতিক ইউরেনিয়ামে যেহেতু এটি খুবই কম পরিমাণে পাওয়া যায়, সেজন্য বিশেষ প্রক্রিয়ায় এটি বাড়ানোর প্রয়োজন হয়।


এটাই পরমাণু সমৃদ্ধকরণ।