‘গত ৭ আগস্ট রাতে ডিজিএফআইয়ের একটি দল আমাকে বাসা থেকে নিয়ে আসে। এরপর আট দিন ধরে গতকাল রাত পর্যন্ত আমাকে আয়নাঘরে রাখা হয়েছিল। আমি কোনও গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত না। আমি নির্দোষ, ন্যায়বিচার চাই।’ সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান আদালতকে এমনটাই বলেছেন।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে জিয়াউল আহসান এসব কথা বলেন। যদিও এ সময় বিরোধীপক্ষের আইনজীবীরা জিয়াউল আহসানকে আয়নাঘর তৈরির কারিগর বলে আখ্যায়িত করেন।
বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ উঠেছেন, সরকারের ভিন্নমতাবলম্বী দমনের সব ধরনের পন্থা ব্যবহার করতেন জিয়াউল আহসান। আয়নাঘরের মূল কারিগরও ধরা হয় তাকে। সরকারবিরোধীদের ধরে এনে এখানে আটকে রেখে নির্যাতন করা হতো দিনের পর দিন। সিলেটের বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর অন্তর্ধান রহস্যের সঙ্গে তার নাম এসেছে বারবার।
তবে আদালতের অনুমতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘যেসব ব্যক্তি আয়নাঘর থেকে বের হয়ে আসছে, তাদের কেউ বলুক আমি তাদের সেখানে রেখেছি। যেভাবে আমাকে নিয়ে দোষারোপ করা হচ্ছে, সেটা সঠিক নয়। আমি অসুস্থ। আমার হার্টে ৭৫ শতাংশ ব্লক ধরা পড়েছে। এ ছাড়া শারীরিক অন্যান্য সমস্যাও রয়েছে।’
প্যাগাসাস সফটওয়্যারের বিষয়ে আদালত জানতে চাইলে জিয়াউল আহসান বলেন, ‘প্যাগাসাস বলে কিছু নেই। আমি মোবাইল ট্র্যাকিং করিনি। আমি নির্দোষ।’
সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা আদালতে এসব কথা বলার সময় বিরোধিতা করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। তারা বলেন, তিনি গণহত্যার আসামি। তার কথা বলার অধিকার নেই। তবে এর তীব্র বিরোধিতা করেন জিয়াউল আহসানের বোন অ্যাডভোকেট নাজনীন নাহার। এ সময় জিয়াউল আহসান বলেন, র্যাবে থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা বা জিডি হয়নি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জিয়ার আট দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) গভীর রাতে ঢাকার খিলক্ষেত এলাকা থেকে জিয়াউল আহসানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে নিউ মার্কেট থানার এক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।