প্রবাসীদেরকে টার্গেট করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল পেতেছে চট্টগ্রাম মিরশরাইয়ের শান্তা
Monday, June 16, 2025
নিজস্ব প্রতিবেদক,
ওমান প্রবাসী কক্সবাজার চকরিয়া উপজেলার ২৩ বছরের যুবক আব্দুল মোমেন (প্রকাশ মুবিন) বিগত ২ বছর পুর্বে ফেইসবুক ফ্রেন্ড সুত্রে পরিচয় হয় শান্তা নামক এক নারীর সাথে।
ঐ নারী মুবিন কে পরিচয় দেয় শান্তা আক্তার (১৮) নামে,পেশা- কলেজ স্টুডেন্ট, অবিবাহিত, বাড়ি মিরসরাই চট্টগ্রাম। এরপর থেকে সময় পেলেই দুজনের মাঝে কথা চলতো চ্যাটিং চলতো ম্যাসান্জারে কথা হতো ঘন্টার পর ঘন্টা উভয়ের একে অপরের পারিবারিক সুখ দুঃখ, হাসি কান্না, আনন্দ বেদনার বিষয় গুলো ভাগাভাগি করে নিতো নিজেদের মতো করে।
কৌশলী শান্তা নিজেকে সব সময় গরিব অসহায় পরিবারের মেয়ে হিসেবে মুবিনের কাছে উপস্থাপন করে নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা কামনা করে আসতো। এদিকে প্রবাসী মুবিন তার অসহায়ত্বের কথা শুনে মাঝে মাঝে টাকা পাঠাতো শান্তার একাউন্টে। আজ বান্ধবীর বিবাহ অনুষ্ঠানে, কাল জন্মদিনে উপহার, পরশু কলেজ ফি, পরিক্ষা ফি, ঈদের ড্রেস, নতুন কাপড়, নতুন মোবাইল ক্রয় ইত্যাদি ইত্যাদি প্রয়োজন দেখিয়ে মাসে মাসে চলতো টাকা হাতিয়ে নেয়ার কাজ। ইতিমধ্যে চলে প্রায় ২ বছর। ৬ মাস আগে মুবিন তার ফেইসবুক বন্ধু শান্তাকে জানায় সে ছুটিতে দেশে আসছে এবং তার সাথে যেন দেখা করে। মুবিন দেশে আসার কয়েকদিন পর প্রথম দুজনের সরাসরি দেখা হয় একটি পার্কে। তখন উভয়ে মোবাইলে কয়েকটি সেলফি তোলেন। এর পর থেকে মাঝে মধ্যে দুজনে দেখা হতো কথা হতো। ইতিমধ্যে মুবিন জানতে পারে এতদিন যে মেয়েটি নিজেকে ১৮ বছরের কিশোরী পরিচয় দিয়ে আসছিল তার প্রকৃত বয়স(৩২) পুরো নাম শান্তা আক্তার, পিতা- মৃত আবুল কাশেম চট্টগ্রাম মিরসরাইয়ের রসুলপুর গ্রামে বাড়ি। শান্তার এনআইডি রয়েছে ২ টা, একটাতে শান্তা আক্তার অপরটি আয়েশা সিদ্দিকা বিগত ১০বছর পুর্বে আনোয়ার বাবু নামের এক ব্যাক্তির সাথে বিবাহ হয়। তার সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে । এর পর দ্বিতীয় বিয়ের পীড়িতে বসেন এ নারী তার বর্তমানে দ্বিতীয় স্বামী ফরহাদ হোসেন এ সংসারে রয়েছে ৮ বছরের এক ছেলে। মুবিন সব কিছু জেনেও না জানার ভান করে তার সাথে বন্ধু সুলভ আচরন করে আসছিল। মূলত ঐ নারীর পেশাটাই নিজেকে অবিবাহিতা পরিচয় দিয়ে প্রবাসী ছেলেদের সাথে বন্ধুত্ব করে নিখুঁত অভিনয়ের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া। এটা তার পেশা এবং হয়ে নেশা দাঁড়ায়। প্রবাসী মুবিন আরও জানতে পারে তার মতো একাধিক যুবককে এভাবে মিথ্যা প্রেমের জাল বিছিয়ে নিঃস্ব করেছে এবং এখনো অনেকের সাথে চলমান আছে। তারই ধারাবাহিকতায় শান্তার প্রতারনার ফাঁদে পা দিয়েছে কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার যুবক প্রবাসী মুবিন।
প্রবাসী মুবিনের বিদেশে চলে যাওয়ার সময়ের কথা শন্তাকে জানালে ঐ দিন শান্তার কথা শুনে মুবিনের মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়।
হঠাৎ শান্তা আক্তার (আয়েশা ছিদ্দিকা) মুবিন কে বলে আমি তোমাকে ভালবাসি তুমি আমাকে বিয়ে করে সাথে নিয়ে যাও
তখন মুবিন বলে তুমি এসব কি বল? ছি-- আমি বিবাহিত আমার স্ত্রী আছে সংসার আছে এবং ১ সন্তানের বাবা।
আমিতো তোমার সাথে বিয়ে করার জন্য প্রেমতো করিনি? শুধুমাত্র ফেইসবুকের সুত্র ধরে বন্ধুত্ব করেছি এবং একজন বন্ধু হিসেবে তোমাকে যতঠুকু সহযোগিতা করার প্রয়োজন ছিল আমি তা করেছি।
তোমাকে তো আমি একবারও বলিনি বিয়ে করবো। আমার কাছে তোমার গোমুর ফাঁস হয়ে গেছে। তুমি আমার সাথে অবিবাহিত বলে বন্ধুত্ব করলেও প্রকৃতপক্ষে তুমি বিবাহিত প্রথম বিয়ের কথা, দ্বিতীয় বিয়ে করে বর্তমানে সংসার করার কথা, সন্তানের কথা তুমি আমার কাছ থেকে গোপন করলেও আমি সব জেনে গেছি। ছলনাময়ী শান্তা তখনো সবকিছু অস্বীকার করে নিজেকে অবিবাহিতা দাবীতে অনড় থাকলে মুবিন একপ্রকার উত্তেজিত হয়ে শান্তাকে বলে তোমার সাথে সব সম্পর্ক এখানেই শেষ আমার সাথে কখনো যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেনা বলে বিদায় নিয়ে চলে আসে।
এর কিছুদিন পর মুবিন তার কর্মস্থল প্রবাসে চলে যায় এবং সবকিছু স্বভাবিক ভাবে চলছিল।
কথায় আছে আমি যতই দুঃখ থেকে দুরে থাকিনা কেন দুঃখ কিন্তু আমার পিছু ছাড়ে না, মুবিনেরো হয়েছে তা-ই, টাকার গাছ সোনার হরিন হারিয়ে ছলনাময়ী নারী শান্তা এখন পাগলের মতো আচরণ শুরু করেছে, ভুলে গেছে তার অতীত জীবনের কথা, বয়স, বিবাহ, কিঃবা স্বামী সন্তানের কথা।
টাকার লোভে মুবিনের প্রবাস জীবন কে দুর্বিসহ করে তুলেছে প্রতারক শান্তা।
পার্কে দুজনের তোলা কয়েকটি ছবি, বিভিন্ন সময় দেয়া ফেসবুকের ম্যাসেজ এবং কল রেকর্ডিংকে পুঁজি করে ঐ শান্তা নানানভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে পাশাপাশি একটি ভুয়া স্ট্যাম্প বানিয়ে বিয়ের জন্য ফোনে মুবিনের পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টির করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ প্রবাসী এ যুবকের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শান্তা ছোটকাল থেকেই উশৃংখল ও বেপরোয়া জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিল। তার বেপরোয়া জীবনযাপনের কারনে পড়াশোনায় বেশিদূর যেতে পারেনি। প্রেম করে বিয়ে করেছিল একই এলাকা মিরসরাইয়ের ছেলে বাবুর সাথে, তার বেপরোয়া জীবনযাপনের কারনে তার সাথে ডিভোর্স হয়ে যায়। এর পর ফরহাদের সাথে বিয়ে হলে তাদের কোল জুড়ে আসে এক পুত্র সন্তান। এতেও ষ লোভ লালসা অবৈধ পরকিয়া প্রেম বেপরোয়া চলাফেরা ছাড়তে পারেনি এই নারী।
প্রতারনাটা যাতে নিখুঁতভাবে করা যায় তার জন্য আয়েশা ছিদ্দিকা নাম ব্যবহার করে আরেকটি এনআইডি বানিয়েছেন। জানা গেছে শান্তা আক্তার ওরফে আয়েশা ছিদ্দিকা ছেলেদের সাথে সম্পর্ক করার সময় একেক সময় একেক নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে প্রতারন করে থাকে। প্রবাসী যুবক মুবিনের বেলায়ও তাই হয়েছে।
মুলত শান্তা আক্তার ওরফে আয়েশা ছিদ্দিকা নামক ঐ নারী একজন বহুরূপী ছলনাময়ী। সে এভাবে প্রেমের মিথ্যা নাটকের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে অনেক যুবককে পথের ফকির বানিয়ে উড়াল দিয়ে আরেকটা ধরতো। এভাবেই চলছে তার বাধাহীন বেপরোয়া জীবন। প্রবাসী মুবিন বলেন, শান্তা আক্তার ওরফে আয়েশা ছিদ্দিকার সাথে ফেইসবুকে বন্ধুত্ব হওয়ার পর থেকে তার অসহায়ত্বের কথা শুনে নানাভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছিল। বিনিময়ে আমি তার কাছ থেকে এখন পাচ্ছি লাঞ্চনা ও অপবাদ। সে আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে ব্রেকমেইল করে বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করে আমার সংসারে অশান্তির আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। স্বামী সন্তান থাকার পরও যে নারী শুধু অর্থের লোভে অপর একজন বিবাহিত পুরুষ কে বিয়ে করতে পাগলামি বুঝতে হবে তার মাথায় গন্ডগোল আছে ।
এখন বিভিন্ন সময় অপরিচিত নাম্বার থেকে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে ফোনে খুন ঘুম মামলা সহ নানান হুমকি ধমকি আসছে। তার একটাই দাবি হয় বিয়ে না হয় মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দফারফা করা।
এ বিষয়টি জানতে চাওয়া হলে মুবিনের স্ত্রী রেহেনা আক্তার জানান আমার স্বামী মুবিন একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা, পরিবারের শান্তি সুখের জন্য প্রবাস জীবন কাটাচ্ছে। শান্তা নামের ঐ নারী আমার স্বামীর সরলতার সুযোগ নিয়ে ব্রেকমেইল করছে এবং ফোনে পাগলের ন্যয় আচরন করে বিয়ের দাবি করছে। সে আমাকেও অনেকবার ফোনে হুমকি দিয়েছে।
সে যদি এসব নোংরা কাজ বন্ধ না করে তাহলে আমি আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবো এবং ঐ নারীর বিরুদ্ধে প্রতারনার মামলা করবো।
বর্তমানে ঐ ছলনাময়ী নারী শান্তা আক্তার ওরফে আয়েশা ছিদ্দিকার নানামুখী বিতর্কিত আচরনে প্রবাসী মুবিন নির্ঘুম রজনী পার করছে। এ ব্যপারে প্রশাসন ও এলাকার জন প্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এ রেমিট্যান্স যোদ্ধা মুবিন।