আ'লীগ নেত্রীকে রক্ষায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা চাঁদা নেয়ার অভিযোগ

কক্সটিভি নিউজ ডেস্ক : কক্সবাজার শহরের আলোচিত এক আওয়ামী লীগ নেত্রীকে রক্ষার আশ্বাস দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা নুর উদ্দিন খাঁন কোম্পানির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নুর উদ্দিন শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব শাখা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। গোপনে ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, ১ নম্বর ওয়ার্ডের সমিতি পাড়ার আওয়ামী লীগ নেত্রী রোজিনা আক্তারকে রাজনৈতিক ও পুলিশি হয়রানি থেকে রক্ষা করার আশ্বাস দিতে মাথায় কোরআন তুলছেন নুরউদ্দিন। একই সঙ্গে তার হাত থেকে নগদ দুই লাখ টাকাও গ্রহণ করছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর জেলায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা একে ধর্মীয় অবমাননা ও নৈতিক অবক্ষয়ের উদাহরণ হিসেবে দেখছেন। রোজিনা আক্তার অভিযোগ করেন, প্রথমে নুর উদ্দিন রাজনৈতিক আশ্রয় এবং পুলিশি হয়রানি থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুই লাখ টাকা নেন। তবে এখানেই শেষ হয়নি; টাকা নেওয়ার পর আরও অর্থ দাবি করেন এই বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, 'প্রথমে ভেবেছিলাম আমাকে বিপদ থেকে বাঁচাবেন। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরও আরও টাকার জন্য চাপ দেন। আমি রাজি না হলে তিনি আমাকে হত্যার পর আমার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। এখন আমি ভয়ে আছি।' স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নুরউদ্দিন খাঁনের বিরুদ্ধে মানব পাচার, পুলিশের ওপর হামলা, আসামি ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ বহু বছর ধরে রয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, রাজনৈতিক ছত্রছায়ার কারণে তিনি বারবার আইনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। শহরের এক ব্যবসায়ী বলেন, নুরউদ্দিনের নাম শুনলেই মানুষ আতঙ্কিত হয়ে যায়। অথচ আজ তিনি কোরআন মাথায় রেখে টাকা নিচ্ছেন- এটা শুধু প্রতারণা নয়, ভয়ঙ্কর রসিকতাও। ঘটনা জেলায় তোলপাড় সৃষ্টির পরও প্রশাসন এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান বলেন, ঘটনাটি আমাদের নজরে এসেছে, তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হতো। আমরা বিষয়টি খোঁজ খবর নিচ্ছি। অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা নুরউদ্দিন খাঁন দাবি করেন, আমি এলাকার সমাজপতি, বিচার-শালিশ সব আমি করি। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এটার প্রতিবাদও দিয়েছি। তবে তাকে প্রশ্ন করা হলে, কেন কোরআন মাথায় তুলে টাকা নেন, নুর উদ্দিন বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ফোন কেটে দেন এবং পরে প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন। কক্সবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি আমাদের নজরে আসার পর থেকে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রথমে তাকে শোকজ করা হবে। যদি সে যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে ব্যর্থ হয়, তবে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।