ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতে এই আন্দোলন ছিল সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিয়ে। সরকারের নানামুখী নির্যাতনের কারণে পরবর্তীতে এটি কোটাবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। যৌক্তিক এই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার পাশে থাকতে না পারায় এবার আক্ষেপ প্রকাশ করলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।
গত দুই জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন মাশরাফী। সবশেষ মন্ত্রিসভায় হুইপের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। দলীয় ছায়ায় থাকার কারণেই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলনে নামতে পারেননি তিনি, সম্প্রতি একটি অনলাইন পোর্টালকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়েছেন ম্যাশ।
দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য হলেও মূলত ক্রিকেটার হিসেবেই বেশি জনপ্রিয় মাশরাফী। দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে অন্যতম আদর্শও তিনি। আর তাই যৌক্তিক আন্দোলনে মাশরাফীর নীরব ভূমিকা মানতে পারেননি ভক্ত-সমর্থকরা। সরকার পতনের পর তার নড়াইলের বাড়িতেও হামলা করেছে একদল দুর্বৃত্ত।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নিজের ভূমিকা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মাশরাফী বলেন, 'যদি সরাসরি বলি, তাহলে অবশ্যই আমি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছি অনেক মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে। কোটা সংস্কারের আন্দোলন অবশ্যই যৌক্তিক ছিল। আমার নিজের কাছেও মনে হচ্ছিল, এটা হয়ে যাবে। তবে সবাই যখন চাচ্ছিল যে আমি কিছু একটা বলি বা স্ট্যাটাস দেই (ফেসবুকে)… ততক্ষণে আসলে সবকিছু এত দ্রুত হচ্ছিল… ভাবছিলাম যে আমি যদি কিছু লিখি বা মন্তব্য করি, সেটার সম্ভাব্য পরিণতি কী হতে পারে… অনেক কিছু ভাবছিলাম আর কী… সব মিলিয়ে কিছু লেখা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, 'আমি কিছু করার চেষ্টা করিনি, তা নয়। আমি শুধু কিছু লেখার ভাবনায় থাকতে চাইনি। চেয়েছিলাম ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলতে, আলোচনার মাধ্যমে কিছু করা যায় কি না। সেই শুরুর দিকেই চেষ্টা করেছি। কারণ তাদের দাবি আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়েছে। কিন্তু সেটাও করতে পারিনি। সব মিলিয়ে অবশ্যই ব্যর্থ হয়েছি।'
শেখ হাসিনার পতনের আগে থেকেই দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সরকার পতনের পরেও অনেকে পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর অনেকে পালাতে গিয়ে পড়েছেন ধরা। তবে মাশরাফী জানিয়েছেন, ঢাকা শহরে নিজ পরিবারের সঙ্গেই অবস্থান করছেন তিনি।
নিজের শারীরিক অবস্থা ও অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে উত্তরে ম্যাশ বলেন, 'শারীরিকভাবে ঠিক আছি। মানসিকভাবে অবশ্যই ভালো অবস্থায় নেই। আছি আর কী। ঢাকাতেই আছি, পরিবারের সঙ্গে।